মুমিনের জন্য ঈদ পরবর্তীতে করনীয়

ঈদ-উল-আজহার পরবর্তীতে করণীয় সম্পর্কে ইসলামে যে দিকনির্দেশনা রয়েছে তা সম্পর্কে আজকের আলোচনা
ঈদুল আজহা বিশেষত্ব ও মহিমায় অনন্য। ঈদুল আজহা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের প্রকাশ, আবার মুসলিম উম্মাহর জন্য মিলন ও আত্মবিশুদ্ধির সুযোগ।
আল্লাহকে স্মরণ ও শুকরিয়া আদায় করা
ঈদ ও কোরবানিতে যে অনুগ্রহ ও সুযোগ আল্লাহ দিয়েছিলেন, তার জন্য আল্লাহর মনে মনে ও মুখে শুকরিয়া আদায় করা উচিত। যেমন আল্লাহ কোরআনে বলেন:
> “আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো যে তোমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছিলেন; তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।”
(সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫)
আত্মবিশুদ্ধিতে অঙ্গন দেওয়া
ঈদ ও কোরবানিতে আত্মবলিদান ও আল্লাহর অনুগত্য প্রকাশিত হয়। তাই ঈদের পরে উচিত আত্মবিশুদ্ধিতে মনোযোগ দেওয়া অর্থাৎ গুনাহ ও নিজের ভুলগুলো পরিহার করে ভালো কাজকে নিজের জীবনের অংশ বানানো।
আত্মীয় ও প্রতিবেসীর সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখা
ঈদ হলো বন্ধন ও ভালোবাসার উৎসব। আত্মীয় ও প্রতিবেসীর সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ রাখা, অসন্তুষ্ট আত্মীয়কে ক্ষমা করা ও বন্ধুত্বর বন্ধনকে সুদৃঢ় করার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে বলা হয়েছে ইসলামে।
গরিব ও অভাবগ্রস্তকে মনে রাখা
কোরবানিতে যেমন গরিব ও অনাথকে অংশ দেওয়া হয়, ঈদ পরবর্তী দিনগুলোতেও অনাথ ও অভাবগ্রস্তকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আল্লাহ বলেন
> “খাও ও খাওয়াও অভাবগ্রস্তকে।”
(সূরা আল-হাজ্জ: ২৮)
ভালো কাজ ও দান অব্যাহত রাখা
ঈদ ও কোরবানিতে যে ভালো কাজ শুরু করেছিলেন, যেমন দান, আত্মবিশুদ্ধিতে অঙ্গন ও আল্লাহর পথে আত্মনিবেদন, তা ঈদ পরবর্তী দিনগুলোতেও অব্যাহত রাখা উচিত।
ভুল ও অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হওয়া
ঈদ হলো আত্মসমালোচনার সুযোগ যা ভুল করেছি তা স্বরণ করে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং অঙ্গীকার করা যে আগামী সময় থেকে ভালো পথেই নিজের জীবনকে পরিচালিত করব।
ঈদ-উল-আজহা মূলত আত্মবিশুদ্ধিতে ও কল্যাণে অগ্রবর্তী হতে অনুপ্রেরণা দিতে এসেছে। আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে চাইলে ঈদকে আত্মসমালোচনার ও নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করাই একজন প্রকৃত মুমিনের কাম্য হওয়া উচিত।
মাও. মুফতি মোহাম্মাদ উল্লাহ্
খতীব: চকলোকমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ বগুড়া।
পরিচালক: সরকার বাড়ি তালিমুল কোরআন কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
Viewed 3310 times