July 4, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

অপরাধ দেখে নীরব থাকা সেই অপরাধের সমর্থন

শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনে দুপুরে চুরি, ছিনতাই,হত্যা, ধর্ষণ সহ নানা রকম অপরাধ অপকর্ম বেড়েই চলেছে বিশেষ করে ঢাকা শহরে

উদাহরণ স্বরুপ ছোট চুরির ঘটনা থেকেই যদি ধরি ঢাকার রাস্তায়

গাড়ির পার্টস হারিয়ে যাওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন লুকিং গ্লাসসহ দরজার অংশবিশেষ, রাডারসহ এলইডি লাইট চুরি যাচ্ছে, মার্কেটের সামনে পার্ক করা গাড়ি, সিএনজি, লেগুনা, পিকআপ, মিনিবাস ইত্যাদি চুরি যাচ্ছে এমনকি অনেক সময় শুধু ইঞ্জিন চুরি করে চোরেরা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে এই কারণে চোরচক্রের খুব বেশি লাভ না হলেও পেশাদার চোরেরা এখন পার্কিং করা গাড়ির ভিতর থেকে দামী ব্র্যান্ডের মিউজিক প্লেয়ার, পাওয়ার ব্যাটারি, এসির যন্ত্রাংশ ইত্যাদি দ্রুত সময়ে খুলে নিয়ে যাচ্ছে। সামান্য অসতর্ক হলেই গাড়ির জানালা কাঁচ ভেঙে অথবা দরজা ভেঙে জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ এখন নিজের গাড়ির জন্য নিরাপত্তার দিক থেকে ডিজিটাল ট্র্যাকার, অ্যালার্ম সিস্টেম এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরাও ব্যবহার করছে।

 

ইসলামের দৃষ্টিতে চুরি শুধু একটি অপরাধই নয়, এটি একটি গুরুতর গুনাহ। কেউ যদি গোপনে অন্যের মালিকানাধীন সম্পদ বা সম্পত্তি নিজের করে নেয়, তাহলে সেটা চুরি হিসেবে গণ্য হয়। ইসলামে চোরকে ধরার পাশাপাশি তার বিচার ও শাস্তির বিধান রয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে:

“আর পুরুষ বা নারী চোর তাদের উভয়ের হাত কেটে দাও তাদের অপরাধের প্রতিফল ও আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্ত স্বরূপ। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।”

(সূরা: মায়িদা, আয়াত: ৩৮)

 

তবে এই আয়াত সম্পর্কে বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, ইসলাম চোরকে শুধু শাস্তি দিতে বলেনি, বরং শাস্তির পাশাপাশি সমাজের দায়িত্ববান মানুষদের প্রতি আহ্বান করেছে যাতে করে কেউ চুরি করার সুযোগ না পায়।

 

চোর দেখে নীরবতা মানে সহায়তা

আজ সমাজে চুরি-ডাকাতি, দুর্নীতি, অবিচার, নির্যাতন ইত্যাদি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু আমাদের একটা বড় অংশ এসব অন্যায় ও অপরাধ দেখে নিরব থাকে। ইসলামে অপরাধ দেখে নীরব থাকা ঘৃণিত কাজ। নবীজি বলেছেন,

“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অন্যায় কাজ করতে দেখে, তাহলে সে যেন তার হাত দিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। যদি তা না পারে, তবে মুখে প্রতিবাদ করুক। যদি তাও না পারে, তাহলে অন্তরে ঘৃণা করুক। আর এটি হলো ঈমানের দুর্বলতম স্তর।”

(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং: ৪৯)

 

সকলের দায়িত্বশীল আচরণ জরুরি

সমাজে অপরাধের বিরুদ্ধে নীরবতা মানে পরোক্ষভাবে অপরাধকে মেনে নেওয়া

অনেকেই অপরাধ দেখে চুপ করে থাকে, নিজেকে বাঁচিয়ে চলেন।

অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করে, অপরাধের প্রতিবাদ করা এবং দায়িত্বশীল আচরণ করা সব মুসলমানের কর্তব্য। ইসলাম শান্তির ধর্ম, অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

 

আমরা যদি সবাই সচেতন হই, তাহলে সমাজ থেকে অপরাধ অনেকটাই দূর করা সম্ভব। আর মনে রাখতে হবে, অপরাধ দেখেও যদি কেউ নীরব থাকে, তাহলে সেই নীরবতাই এক সময় ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

মূল কথা হলো

আমরা যদি অপরাধ দেখে নীরব থাকি, তাহলে এক সময় সেই অপরাধ আমাদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। নীরবতা তখন আর শান্তি নয়, বরং ভয়াবহ এক পরিণতির সূচনা।

 

মাও. মুফতি মোহাম্মাদ উল্লাহ্।

খতীব: চকলোকমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ বগুড়া।

পরিচালক: সরকার বাড়ি তালিমুল কোরআন কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা।

 

Viewed 2000 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!