থানা চত্ত্বরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২১, থানা ভাঙচুর

ডেস্ক রিপোর্টঃ পাথরবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দু’জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় ঢুকে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় পাটগ্রাম থানার নয়টি ল্যাপটপ ভাঙচুর, একটি ল্যাপটপ চুরিসহ গাড়ি, জানালা ও বিভিন্ন আসবাবপত্রে ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও সংঘর্ষে ৬ পুলিশসহ ২১ জন আহত হয়। আহতরা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস জানান, বুড়িমারী-রংপুর মহাসড়কের অ-বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় বেলাল ও সোহেল নামে দুইজনকে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকার বেশি রিসিভ মানিসহ আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাতেই থানার সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পাটগ্রাম থানার পাশ্ববর্তী থানা হাতিবান্ধা থানা ও হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাটগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে চাইলে সেখানে বাধা সৃষ্টি করে সড়ক অবরোধ করে রাখে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এতে ওই তিন থানা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে বিজিবি পাটগ্রাম থানা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবস্থান নেয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান অভিযোগ করেন, আমাদের বৈধ ইজারাদারদের বিনা কারণে ধরে নিয়ে গিয়ে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের ১১ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এখানে ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মূলত দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, হঠাৎ করেই বিএনপির একটি দল থানায় আক্রমণের চেষ্টা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। তারা থানার কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। তিনি জানান, সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ৬ জন সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এদিকে, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধীর কোনো দল থাকতে পারে না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত ডিআইজি শরীফ উদ্দিন, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার, পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম এবং পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
Viewed 840 times