আইনি জটিলতায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে জব্দ শত শত গাড়ি

ডেস্ক রিপোর্টঃ নানা কারণে জব্দ হয় যানবাহন। মামলা চলতে থাকলে গাড়িগুলো পড়ে থাকে থানার আশপাশেই। এভাবেই বাড়তে থাকে গাড়ির জঞ্জাল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো হয় অনেক গাড়ি। ধরে মরিচা। ছেয়ে যায় লতায়পাতায়। পড়ে শেওলাও। পড়ে থাকতে থাকতে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার উপক্রম হয় এসব জব্দ গাড়ির। থানার প্রাঙ্গণে পড়ে থাকা এসব যানবাহন দখল করে রাস্তাও।
অন্যান্য থানাগুলোর মতো একই অবস্থার দেখা মিলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পুলিশ ফাঁড়িতে। একই অবস্থার দেখা যায় লক্ষ্মীপুর সদর বিআরটিএ অফিসের সামনেও। এ দুই স্থানে অন্তত পাঁচ শতাধিক জব্দ গাড়ি পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। আইনি জটিলতায় মালিকরা ফিরে পান না এসব গাড়ি। অনেক সময় পেলেও তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, সদর, কমলনগর, রামগতি, রামগঞ্জ থানা ও চন্দ্রগন্জ হাইওয়ে থানায় বিভিন্ন ঘটনায় শত শত গাড়ি জব্দ করা হয়। কিন্তু এসব থানার নির্দিষ্ট ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেই। তাই থানা চত্ত্বরে অলিখিত ডাম্পিং স্টেশনে জব্দকৃত গাড়িগুলো রাখা হয়। এমনকি, সদরের বিআরটি অফিসের সামনে খালি জায়গায় সারি করে রাখা আছে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন।
সরেজমিনে গিয়ে রায়পুরের হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ি, বিআরটি অফিস ও সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা, চোরাই মালামাল বহনসহ বিভিন্ন মামলায় জব্দ করা ট্রাক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গাড়ি রাখা হয়েছে। কোনো কোনো গাড়ি একেবারে মরিচায় ঢেকে রয়েছে। জব্দকৃত মোটরসাইকেলগুলোর ওপরে মরিচার আস্তর পড়ে আছে। গাড়িগুলোর রং ফেকাসে হয়ে রয়েছে। অনেক গাড়িতে মরিচা ধরতে ধরতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে অযত্ন-অবহেলায় এসব গাড়ির এখন জীর্ণশীর্ণ অবস্থা।
লক্ষ্মীপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোবারক হোসেন বলেন, হাইওয়ে থানার জন্য নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বাধ্য হয়ে জব্দকৃত যানবাহন আদালতের নির্দেশনায় থানায়, পুলিশ লাইন বা বিআরটি অফিসের সামনে রাখতে হচ্ছে। তবে বছরের পর বছর হয়ে গেলেও আদালতের কোনো নিদর্শনা না পাওয়ায় জব্দকৃত গাড়িগুলো ছাড়া হয় না। এতে অনেক গাড়ি এখানেই নষ্ট হয় এবং মাটির সঙ্গে মিশে যায়।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, আইনি জটিলতা কাটিয়ে উঠতে বছরের বছর চলে যায়। সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিক আইনি জটিলতা কাটিয়ে এলেও গাড়িগুলোর কোনো যন্ত্রাংশ সচল থাকে না। তাই তারা আদালতের নির্দেশনা ছাড়া গাড়ি নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
বিআরটির লক্ষ্মীপুর সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক প্রনব চন্দ্র নাগ বলেন, ‘অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় এসব গাড়ি ব্যবহারের উপযোগিতা হারাচ্ছে। আদালতের নির্দেশনা ছাড়া কিছুই করা যাচ্ছে না। আমরা নিরুপায়।
Viewed 980 times