July 4, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

চট্টগ্রাম বন্দরের ৫০ কোটি টাকা স্টোর রেন্ট ফাঁকি, সিআইডি কর্তৃক প্রতারক চক্রের মূল হোতা গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টারঃ স্টোর রেন্ট ফাঁকি দিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জাল করে চট্টগ্রাম বন্দর হতে আমদানিকৃত মূল্যবান যন্ত্রপাতি খালাস প্রতারণা চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ তৌহিদুল ইসলাম শুভ (৩০), পিতা-মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতা-ফরিদা ইয়াসমিন, সাং-পশ্চিম উজানচর, বালিয়াডাঙ্গা, থানা-গোয়ালন্দ, জেলা-রাজবাড়ী। অদ্য ১৮/০৬/২০২৫ খ্রি. তারিখে ঢাকার সোবহানবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত তৌহিদুল ইসলাম@শুভ নিজেকে সামরিক বাহিনীর মেজর পরিচয় প্রদান করত। গ্রেফতারকালীন তার নিকট হতে সামরিক পোষাকযুক্ত মেজর পদের ভুয়া পরিচয়পত্র, অনেকগুলো মেজর পদের ভিজিটিং কার্ড, ০৮টি মোবাইল ফোন, ১০টি সীম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই এবং ০১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।

জানা যায় যে, বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল কোম্পানী লিমিটেড মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনের জন্য বিশেষ সুবিধায় বিভিন্ন সময় আনা প্রায় ১৩৯টি কন্টেইনারে মূল্যবান যন্ত্রপাতি আমদানি করে কিন্তু যথা সময়ে খালাস না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট বসুন্ধরা কোম্পানির প্রায় ৯২ (বিরানব্বই) কোটি স্টোর রেন্ট বকেয়া পড়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল কোম্পানী লিমিটেড স্টোররেন্ট মওকুফের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন থাকাকালীন বসুন্ধরা গ্রপ অব কোম্পানীজ এর সিনিয়র ম্যানেজার জনাব ফয়েজুর রহমান একটি স্টোর রেন্ট মওকুফ পত্র মামলায় গ্রেফতারকৃত অন্য এক অভিযুক্ত ও প্রতারক চক্রের সদস্য আবু হানিফা@ হানাফি@ আমিনুল ইসলাম@ আমিন(৩৩) এর কাছ থেকে প্রাপ্ত হন এবং চট্টগ্রাম বন্দর হতে উক্ত যন্ত্রপাতি খালাসের চেষ্টা করেন। স্টোর রেন্ট মওকুফ পত্রের বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে উক্ত পত্রটি জাল ও Fake Letter মর্মে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানায়। স্টোর রেন্ট মওকুফের জাল পত্রের বিষয়টি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর মামলা নং-০৭, তারিখ- ১৫/০৫/২০২৫ খ্রি., ধারা- ৪২০/৪৬৮/৪৭১/১০৯, পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করে। মামলাটি রুজুর পর সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো এর উপর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীতে সিআইডি‘র সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এর সহায়তায় ও তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও গোপন সূত্রের মাধ্যমে অভিযুক্ত মো. তৌহিদুল ইসলাম শুভ (৩০)কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত কথিত মেজর তৌহিদুল ইসলাম@শুভ এর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী জেলাধীন গোয়ালন্দ ঘাট থানায় প্রতারণাসহ ০২টি এবং আরএমপি বোয়ালিয়া থানায় প্রতারণার ০২টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও উক্ত মামলাগুলো ব্যতীত তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী জেলাধীন গোয়ালন্দ থানায় ০১টি সাজা ওয়ারেন্টসহ সর্বমোট ০৪টি ওয়ারেন্ট মূলতবীর তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মামলা রুজুর পর সিআইডি‘র সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এর সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও গোপন সূত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে উক্ত প্রতারক চক্রের মো: ফয়েজুর রহমান(৪২), মোহাম্মদ আবু হানিফা@হানাফি (৩৩), মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম আমিন (৪১), মো: রনি রাজ হোসেন (২৯)দের গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদ আবু হানিফা@ হানাফি (৩৩), মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম @আমিন (৪১), বিজ্ঞ আদালতে ফৌ. কা. বি. ১৬৪ ধারায় নিজ দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম@আমিন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে ০৬টি মামলা বিচারাধীন এবং মোঃ রনি রাজ হোসেন (২৯) এর বিরুদ্ধে ০১টি নারী নির্যাতনের মামলা ও ০১টি প্রতারণা মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
মামলাটি বর্তমানে সিআইডি এর চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো’তে তদন্তাধীন রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, প্রতারক চক্রের অপরাপর সদস্যদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Viewed 400 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!