July 4, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

যেসব কারণে অংশীদারি কুরবানি কবুল হয় না

ইসলামী জীবন ডেস্কঃ নিয়ম : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কেবল একজনের পক্ষ থেকে কুরবানি করা যাবে। এসব পশু দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মিলে কুরবানি করলে কারও কুরবানিই হবে না। আর উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারবে। সাতের অধিক শরিক হলে কারও কুরবানিই হবে না। (ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৯, বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২০৭-২০৮)। জাবের (রা.)-সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, ‘আমরা হজের ইহরাম বেঁধে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বেরুলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের একটি গরু ও একটি উটে সাতজন শরিক হওয়ার নির্দেশ দিলেন।’ (মুসলিম : ১৩১৮/৩৫১, মুয়াত্তায়ে মালেক : ১/৩১৯)।

নিয়ম : সাতজনে মিলে কুরবানি করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। কারও অংশ এক-সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। (যেমন- কারও আধাভাগ, কারও দেড়ভাগ)। এমন হলে কোনো শরিকের কুরবানি হবে না। তেমনিভাবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে কুরবানি করতে হবে। হারাম টাকা দ্বারা কুরবানি সহিহ হবে না। এ ক্ষেত্রে অন্য শরিকদের কুরবানিও আদায় হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২০৭)।

নিয়ম : সব অংশিদারের নিয়ত কুরবানির জন্য হতে হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না; কিন্তু পৌঁছে তোমাদের অন্তরের তাকওয়া।’ (সুরা হজ : ৩৭)। তাই যদি কেউ আল্লাহর নির্দেশ পালনের উদ্দেশে কুরবানি না করে নিছক গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানি করে, তাহলে তার কুরবানি হবে না। তাকে অংশিদার বানালে শরিকদের কারও কুরবানিই আদায় হবে না। সুতরাং খুব সতর্কতার সঙ্গে শরিক নির্বাচন করা চাই। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২০৮, ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৯)।

নিয়ম : যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কুরবানি দেওয়ার নিয়তে ক্রয় করে আর সে ধনী হয়, তাহলে তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা বৈধ। তবে এতে কাউকে শরিক না করে তার একা কুরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরিব হয়, যার ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব নয়, তাহলে যেহেতু কুরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করার মাধ্যমে লোকটি তার পুরোটাই আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা বৈধ নয়। যদি শরিক করে, তাহলে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি। আর কুরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৫০-৩৫১, বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২১০)।

নিয়ম : জবাইয়ের আগে কোনো শরিকের মৃত্যু হলে তার ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানি করার অনুমতি দেয়, তাহলে তা বৈধ হবে। নইলে ওই শরিকের টাকা ফেরত দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে তার স্থলে অন্যকে শরিক করা যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৩২৬, ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৫১)।

নিয়ম :  কুরবানির পশুতে আকিকা ও হজের কুরবানির নিয়ত করা যাবে। এতে প্রত্যেকের নিয়তকৃত ইবাদত আদায় হয়ে যাবে। এমন পশু হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। অন্যথায় হজের কুরবানি আদায় হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২০৯, আল-ইনায়া : ৮/৪৩৫-৩৪৬)।

নিয়ম :  যেসব পশু কুরবানি করা জায়েজ, সেগুলোর নর-মাদা দুটোই কুরবানি করা যায়। (ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২০৫)।

নিয়ম : কুরবানির পশু ক্রয় বা নির্দিষ্ট করার পর তা দ্বারা কোনোরূপ উপকৃত হওয়া মাকরুহ। (যেমন- হালচাষ করা, তার পিঠে আরোহণ করা, বোঝা বহন করানো, পশম কাটা ইত্যাদি)। যদি কেউ উপকৃত হয়, তাহলে পশম বা হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দেবে। (মুসনাদে আহমদ : ২/১৪৬, ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৫৪)।

Viewed 990 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!