ঘুস ছাড়া চাকরি পেয়ে কাঁদলেন নতুন পুলিশ সদস্যরা

ডেস্ক রিপোর্টঃ বিনা ঘুসে,বিনা তদবিরে চাকরি পাব- এটা কখনো ভাবিনি। তবে সত্যি পেলাম! কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন কক্সবাজারের উখিয়ার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে উম্মে হাবিবা। ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে তিনি ১৭তম স্থান অর্জন করেছেন।
চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি চকরিয়ার দুই কন্যা- নূরী জান্নাত এলি ও পুষ্পিতা দাস। তারা যথাক্রমে ২৭তম ও ২৮তম স্থান অর্জন করেছেন।
এমন আবেগঘন দৃশ্য দেখা গেছে বুধবার কক্সবাজার পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে অনুষ্ঠিত কনস্টেবল নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার অনুষ্ঠানে।
এতে ৩২ জন কনস্টেবল চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সম্পূর্ণ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। ঘুস বা তদবিরের কোনো সুযোগ ছিল না। প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ে অংশ নেন ৬৮০ জন। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৩২৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ৫৯ জন। মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয় ৩২ জনকে।
নবনিযুক্ত কনস্টেবল উম্মে হাবিবা বলেন, আমার পরিবার গরিব। ঘুস দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। আল্লাহর রহমতে, নিজে পড়ে, কষ্ট করে প্রমাণ করেছি- যোগ্যতা থাকলে বিনা টাকাতেও চাকরি হয়।
নূরী জান্নাত এলি বলেন, আমার মা বাড়িতে বসে কাঁদছিলেন। ভাবছিলেন, যদি চাকরি না হয়! কিন্তু ফলাফল শুনে আমি কেঁদে ফেলি। এ কান্না হার মানার নয়, জয়ের।
পুষ্পিতা দাস বলেন, পুলিশ মানেই ঘুসে ভর্তি- এ ধারণা বদলে দিয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
রামুর প্রার্থী আবু তাহের বলেন, টাকার অভাবে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। অনেকে বলেছিল, টাকা ছাড়া হবে না; কিন্তু এখন প্রমাণ হলো- বাংলাদেশে বদল আসছে।
ফলাফল ঘোষণার পর অনেকেই আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। জীবনের প্রথম বড় সফলতা- তাও আবার স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত। এ অভিজ্ঞতায় তাদের চোখ ভিজে যায় কৃতজ্ঞতার অশ্রুতে।
অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার নবনিযুক্তদের হাতে ফুল দেন ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্য হিসেবে সততা, দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব নিয়ে দেশসেবায় আত্মনিয়োগ কর।
Viewed 1010 times