April 18, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

সেলুন শ্রমিক সঞ্জয় এর ছেলে শয়নের মেডিকেলে ভর্তি অনিশ্চিৎ

স্টাফ রিপোর্টারঃ সংসারে টানাপোড়েনের মাঝেই স্বপ্নের সোনার হরিণ ডাক্তার হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌছিলেও অর্থাভাবে সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ার উপক্রম হয়েছে শয়ন কুমার দাসের। এবার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান শহরের ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ার সেলুন শ্রমিক সঞ্জয় কুমার দাস’র ছেলে শয়ন কুমার দাস। ছেলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন শয়নের বাবা সঞ্জয় কুমার দাস।

তার বাড়ি কাহালুতে হলেও সেখানে কোন জায়গা জমি না থাকায় দীর্ঘ দেড়যুগ ধরে শয়নের বাবা সঞ্জয় কুমার পরিবার পরিজন নিয়ে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। তিনি শহরের হিন্দুপাড়া বটতলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সেলুন শ্রমিকের কাজ করে খেয়ে-না খেয়ে সংসারের ঘানি টেনে চলেছেন। সেলুন শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালানোর মত যথেষ্ট আয়-রোজগার না হলেও ধার-কর্জ করে এক ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনার খরচ কোনমতে ছালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি ২ লক্ষাধিক টাকা ঋণের মধ্যে পড়েছেন। সংসারের টানাপোড়েন থাকায় ছেলেকে যথেষ্ট টিউশন দিতে পারেননি। তার পরেও মেধাবী ছেলে শয়ন নিজের ইচ্ছা-শক্তি দিয়ে তার স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছেন।

শয়নের মা শিপ্রা দেবী বলেন, সংসারে টানাপোড়েন থাকায় কোন দিন দু’বেলা খাবার জোটে আবার কোনদিন একবেলা না খেয়ে তাদের দিনকাটে। তার উপর স্বামী সঞ্জয় সম্প্রতি ভীষণ অসুখে পড়ার ফলে দীর্ঘদিন কাজ করতে না পারায় ইতিমধ্যে তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি আরও বলেন, তার ছেলেকে তারা তেমন প্রাইভেট শিক্ষক দিতে পারেননি। সে ছোট বেলা থেকেই মেধাবী হওয়ায় এবং প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তি দিয়ে আজ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে ভর্তি শুরু। ইতিমধ্যে কিছু টাকা ধার-কর্জ করে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন ছেলেকে ভর্তি করাতে। তিনি সকলের কাছে ছেলের জন্য আশীর্বাদ কামনাসহ তার লেখাপড়া যাতে চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য সমাজের বিত্তবানদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শয়নের বাবা সঞ্জয় কুমার জানান, সেলুনের কাজ করে যে টাকা তিনি রোজগার করেন তা দিয়ে তার সংসারের খরচ চলে না। এ ক্ষেত্রে তার কিছু গ্রাহক শুভাকাঙ্খী তাকে কিছুটা সহায়তা করেন। আর বাঁকীটা তিনি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার-কর্জ করে কোনমতে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। তার স্ত্রী শিপ্রা এর আগে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে আয়ার কাজ করলেও অসুস্থতার কারণে আর করতে পারেন না। তিনি ছেলে শয়নের ডাক্তার হওয়া পর্যন্ত সহায়তার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান।

ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়া এলাকার বাসিন্দা নওগাঁর বদলগাছির বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, আর্থিক অনটনের মাঝেও সঞ্জয় খুব কষ্ট করে তার ছেলে শয়ন’কে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। তার পরিবারের দৈন্যদশা তিনি কাছে থেকে দেখেছেন। তিনি শয়নের মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য আর্থিক ও মানবিক সহায়তার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান। যোগাযোগ- 01785812463

Viewed 130 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!