স্ত্রীর উপার্জনে স্বামীর অধিকার কতটুকু?
ডেস্ক রিপোর্টঃ
প্রশ্ন: বর্তমানে অনেক সংসারের স্বামী-স্ত্রী উভয়ই চাকরি করে থাকেন। নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সে হিসেবে অনেক বিবাহিত নারীও চাকরি করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে সংসারে স্ত্রীও চাকরি করেন তার উপার্জনে কী স্বামীর কোনো অধিকার রয়েছে কী না বা সংসার খরচের জন্য ব্যয় করা বাধ্যতামূলক কী না?
উত্তর: স্বাভাবিক অবস্থায় ইসলামি শরীয়ত স্বামীকেই গৃহস্থালির ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব দিয়েছে, আর স্ত্রীকে সেই দায়িত্ব থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, পুরুষ নারীদের অভিভাবক, যেহেতু আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু পুরুষরা নিজেদের অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে। (সুরা আন-নিসা: ৩৪)
তাই একান্ত অপারগতা ছাড়া নারীর জন্য ঘরের বাইরে গিয়ে চাকরি করা ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। তবে যদি জীবিকা নির্বাহের অন্য কোনো উপায় না থাকে এবং পরিবারে উপার্জনক্ষম কোনো পুরুষ সদস্যও না থাকেন, তাহলে পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করে কর্মস্থলে গাইরে মাহরাম পুরুষদের সঙ্গে নির্জনতা বা অবাধ মেলামেশা এড়িয়ে সীমিত পরিসরে চাকরি করার সুযোগ শরীয়ত রেখেছে।
আর শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধভাবে নারীর উপার্জিত অর্থ তার নিজস্ব সম্পত্তি। স্বামী সে অর্থে স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত কোনো রকম হস্তক্ষেপ করতে পারে না। স্ত্রী ইচ্ছা করলে নিজ প্রয়োজনে তা খরচ করতে পারেন, মা-বাবার জন্য ব্যয় করতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে স্বামী ও সন্তানদের প্রতিও তা ব্যয় করতে পারেন।
স্বামীর জন্য ব্যয় না করলে গুনাহ তো হবে না, তবে যদি সে আপন ইচ্ছায় স্বামী ও সন্তানদের জন্য তা ব্যয় করেন, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। একটি আত্মীয়তার হক আদায় করার বদলে, আরেকটি সদকার সওয়াব লাভ করার বদলে।
সহিহ বুখারীতে এসেছে, (নারী যদি স্বামীর জন্য ব্যয় করে) তার জন্য রয়েছে দুইটি সওয়াব: আত্মীয়তার সওয়াব এবং সদকার সওয়াব। (সহিহ বুখারি: হাদিস ১৪৬৬)
স্ত্রীর উপার্জিত অর্থ তার অনুমতি ব্যতীত খরচ করা, কিংবা স্ত্রীকে না জানিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোন থেকে শুরু করে কাউকে ওই টাকা দিয়ে সাহায্য করা ইসলাম অনুমোদন দেয় না। এটা জায়েজ নেই। এটা করলে স্ত্রীর অধিকার নষ্ট করা হবে এবং তার আমানতের খেয়ানত করা হবে।
স্ত্রীর উপার্জিত টাকা থেকে পারিবারিক ঋণ পরিশোধ অথবা সংসার পরিচালনার জন্য খরচ করতে হলে অবশ্যই স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। তার অনুমতি হলেই কেবল সম্ভব, অন্যথায় জায়েজ হবে না। কারণ, স্ত্রীর সম্পদের অধিকারী স্বামী নয়। তাই স্ত্রীকে না জানিয়ে তার খরচ করলে স্বামী গুনাহগার হবে।
Viewed 100 times