December 17, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

হজরত মুহাম্মাদ (সা.) তিনি ছিলেন অশান্ত পৃথিবীতে শান্তির দূত

ডেস্ক রিপোর্টঃ

আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগ, এই শব্দবন্ধটির সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু আমরা কি জানি, ঠিক কোন সময়কালকে এবং কেন আইয়ামে জাহেলিয়াত বলা হয়? আজকের এই প্রবন্ধে অন্ধকার সেই যুগ এবং তার পরবর্তী আলোর বার্তা নিয়ে কিছু কথা তুলে ধরব।

নবী ইসাকে (আ.) সশরীরে আকাশে উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মাদের (সা.) পৃথিবীতে আগমনের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়কালকেই সাধারণত ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

কেমন ছিল সে সময়ের পৃথিবী?

পৃথিবী তখন এক অজানা, অন্ধকার গন্তব্যের দিকে ছুটে চলছিল। মানব জাতি স্রষ্টাকে ভুলে নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কেও বেখবর হয়ে পড়েছিল। তাওহিদের (একত্ববাদের) লেশমাত্রও তখন অবশিষ্ট ছিল না। মানুষ মহান আল্লাহর ইবাদত বাদ দিয়ে নির্জীব ও নিষ্প্রাণ বস্তুকে উপাস্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে। জড় বস্তুর সামনে মাথা নত করতে তাদের সামান্যতম দ্বিধাও হতো না। বস্তুত, মূর্তিপূজাই ছিল তাদের নিত্যদিনের প্রার্থনা। এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ পাঁচশত বছর।

ওদিকে, গ্রিক সভ্যতা নতুন শাসনব্যবস্থা আবিষ্কার করে নানাভাবে স্রষ্টাকে অস্বীকার করার পথ পৃথিবীবাসীকে উপহার দেয়। রোম ও পারস্য, এই দুই পরাশক্তি পৃথিবীতে অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে রেখেছিল। নারী জাতি পরিণত হয়েছিল অধীনস্থ পুরুষের খেলনা পুতুলে।

ঠিক এমনই এক ক্রান্তিকালে আরবের মরুপ্রান্তরে ইবরাহিম (আ.)-এর সেই বহু পুরোনো দোয়া এক ঝলকানির মতো আলোকিত করে তোলে গোটা বিশ্বকে। দুনিয়াবাসী তখন বুঝতে পারে, নবী ইসা (আ.) এই আলোরই সুসংবাদ দিয়েছিলেন। পৃথিবীতে আবির্ভাব হয় সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদের (সা.)।

নবী মুহাম্মাদ (সা.) কেবল আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসুলই ছিলেন না, বরং তিনি সমগ্র জগৎবাসীর জন্য রহমত বা করুণাস্বরূপ আগমন করেন। তাঁর আগমনে পাল্টে যায় পৃথিবীর চেহারা। মানবতা ফিরে পায় সজীবতা। বঞ্চিতরা বুঝে পায় তাদের ন্যায্য অধিকার। শোষিতরা মুক্তি পায় গোলামীর জিঞ্জির থেকে।

যদি শেষ নবীর আগমন না হতো, তাহলে আজকে সভ্য পৃথিবীর ইতিহাস হয়তো কখনোই রচিত হওয়া সম্ভব ছিল না।

আরবের বহু মানুষ নবী মুহাম্মাদকে (সা.) পেয়ে তার দাওয়াতে সহযোগিতা করেন। পক্ষান্তরে, তার দাওয়াতকে মিটিয়ে দিতে এবং স্বয়ং আল্লাহর প্রেরিত এই মহান নবীকে হত্যা করতেও কিছু মানুষ উদ্যত হয়। কিন্তু আল্লাহর সিদ্ধান্তের সামনে তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই টেকেনি। আল্লাহ নিজেই নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর রক্ষার দায়িত্ব নেন।

নবুয়তের ১৩ বছর মক্কায় দাওয়াতের কাজ করার পর, আল্লাহর নির্দেশে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় খুব দ্রুত ইসলামের আলো জ্বলে ওঠে। শিশু-কিশোর, আবালবৃদ্ধবণিতা নির্বিশেষে সকলেই ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে এসে সাম্যের বাণী কবুল করে নেন এবং জান্নাতের অধিবাসী হওয়ার পথ বেছে নেন। মদিনায় দশ বছর দাওয়াত ও জিহাদ পরিচালনা করে, ৬৩ বছর বয়সে তিনি রফিকে আলার (সর্বোচ্চ বন্ধুর) সান্নিধ্যে চলে যান।

Viewed 100 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!