December 17, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

ভিটামিন ডির ঘাটতি দেহে যেসব ক্ষতির কারণ

ডেস্ক রিপোর্টঃ

ভিটামিন ডির অভাবে আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডি’র অভাব ও বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে যোগসূত্রের ইঙ্গিত মেলে। ভিটামিন ডি কেবল হাড়ের জন্যই নয়, এটি আমাদের শরীরকে ক্যালসিয়াম পেতে সাহায্য করে, যা শক্ত ও সুস্থ হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বেশিরভাগ সময় আমরা এটিকে ‘সূর্যালোকের ভিটামিন’ বলি। কারণ সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে আমাদের ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করতে শুরু করে। কিন্তু এই ভিটামিনের অভাবে কোন কোন সমস্যা হতে পারে?

আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান ভিটামিন ডি। আমাদের দেহ যখন পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পায় না, তখন নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার মুখে পড়ে, যা ভিটামিন ডি’র ঘাটতি বা অভাব নামে পরিচিত।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, ভিটামিন ডি’র ঘাটতি কিংবা অভাবে দেহের যেসব ক্ষতি হতে পারে—

১. হাড় ক্ষয় ও দুর্বলতা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকলে হাড় পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে।

২. দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা: পিঠ ও শরীরের অন্যান্য সংযোগস্থলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে।

৩. পেশি দুর্বলতা ও ব্যথা: পেশিতে ঘন ঘন যন্ত্রণা বা দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।

৪. ফ্র্যাকচার বা হাড় ভাঙার ঝুঁকি: হালকা আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।

৫. রিকেটস: শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি’র তীব্র অভাবে এই রোগটি হতে পারে, যার ফলে হাড়ের গঠন বিকৃত হয়ে যায়।

৬. অস্টিওম্যালেসিয়া: প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ভিটামিন ডি’র অভাবে হাড় নরম হয়ে যায়, যার ফলে হাড়ে ব্যথা এবং পেশি দুর্বলতা দেখা দেয়।

অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা 

১. ক্লান্তি ও মানসিক অবসাদ: সবসময় অসুস্থ বা ক্লান্ত বোধ করা এবং মানসিক অবসাদ বা বিষণ্ণতা দেখা দেওয়া সাধারণ লক্ষণ।

২. দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা: ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা, সর্দি বা ফ্লুর মতো সংক্রমণ হতে পারে।

৩. ঘা শুকাতে দেরি হওয়া: শরীরের কোনো ক্ষত বা ঘা শুকাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে।

৪. চুল পড়া: হঠাৎ করে বা গুরুতরভাবে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

৫. ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি: গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি ভিটামিন ডি’র অভাব ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৬. জ্ঞানীয় কার্যকারিতা হ্রাস: স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, মনোযোগের অভাব এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন ডি’র অভাব একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্যবিষয়ক উদ্বেগ। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনার শরীরে এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে

গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি’র অভাবে কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে— হৃদরোগ, কয়েক ধরনের ক্যানসার ও মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস। ভিটামিন ডি’র সঙ্গে এসব রোগের সম্পর্ক ভালোভাবে বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন। তবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি’র মাত্রা বজায় রাখা আমাদের দেহের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা

ভিটামিন ডি আমাদের রোগপ্রতিরোধ সক্ষমতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না পেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যতটা ভালোভাবে কাজ করা উচিত ততটা ভালোভাবে কাজ নাও করতে পারে, যা আমাদের দেহকে সংক্রমণ ও রোগের জন্য আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা

সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় ভিটামিন ডি’র অভাব ও বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে যোগসূত্রের ইঙ্গিত মিলেছে, যার মধ্যে রয়েছে বিষণ্ণতা ও চিন্তা সক্ষমতার অবক্ষয়।

কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে, যাদের দেহে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি আছে, তাদের তুলনায় ভিটামি ডি’র অভাবে থাকা লোকজনের বিষণ্নতা ধরা পড়ার ঝুঁকি বেশি। ভিটামিন ডি-এর অভাব আমাদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক পরিণতি ঘটাতে পারে। আমাদের হাড় থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক পর্যন্ত এ পুষ্টি উপাদানটি আমাদের সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ কারণেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, তা সূর্যের আলো, খাবার বা সাপ্লিমেন্ট, যা থেকেই হোক না কেন।

Viewed 100 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!