April 18, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

বগুড়া শিবগঞ্জ থানার এসআই রাজ্জাকের লাগাম টেনে ধরার কেউ কি আছেন !

স্টাফ রিপোর্টারঃ মাদক বিক্রেতা সন্দেহে আটকের পর মারপিট করে যুবকের কাছে থাকা টাকা ও ২ টি মোবাইল ফোন নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক এসআই আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের মহাস্থান মোন্নাপাড়া গ্রামের সোনা মিয়ার পুত্র ইমরান হোসেন (২৮)। গত শুক্রবার (১৪ ফ্রেরুয়ারী) জুম্মার নামাজ পর মহাস্থান বাড়ীর পাশে একটি সবজি আড়তে বসে কয়েকজন মিলে গল্প করছিলেন। এসময় শিবগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক সেখানে অভিযানের নামে বসে থাকা ইমরান হোসেন কে আটক করেন। আটক করে তাকে ইয়াবা কোথায় রেখেছিস বলে মারপিট (চড় থাপ্পড়) মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার দেহ-তল্লাশী করে কাছে থাকা ২২ হাজার টাকা ও ২ টি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখি তাকে সেখান থেকে দ্রুত চলে যেতে বলেন এসআই রাজ্জাক। এঘটনা এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে এক সমাজসেবীর কাছে অভিযোগ করেন ইমরান হোসেন। পরে ঘটনার বেগতিক দেখে এসআই রাজ্জাক ওই দিন রাতেই এক সমাজ সেবকের মাধ্যমে টাকা ফেরত না দিলেও ২ টি মোবাইল ফোন ফেরত দিয়েছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন বলেন, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাড়ীর পাশে বন্ধুদের সাথে আড়তে বসে গল্প করছিলাম। এমতাবস্থায় শিবগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক বীরদর্পে এসে আমাকে আটক করেন। এরপর অন্যায় ভাবে আমাকে চড়থাপ্পড় মেরে বলে ইয়াবা কোথায়। আমি তার কথায় হতভম্ব হয়ে বলি কিসের ইয়াবা? একপর্যায়ে তিনি আমাকে চড়থাপ্পড় মেরে এনজিও থেকে লোন তোলা আমার কাছে তরমুজের ব্যবসার জন্য রাখা ২২ হাজার টাকা ও আমার ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এবং কাউকে কিছু বললে মাদক মামলায় জেলে প্রেরণ করা হবে বলে হুমকি দিয়ে তিনি চলে যান। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন বলেন, প্রথমে মনে করছিলাম এসআই রাজ্জাক প্রসাব করার জন্য আড়তের দিকে আসতেছেন। আমার কাছে যদি মাদক থাকতো আমি তাকে দেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে পারতাম। আমি এই পুলিশ সদস্যদের কঠিন বিচার দাবি জানাই। যাতে আমার মত আর কোন নিরীহ ব্যক্তি যেন তার হয়রানির শিকার না হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনা সত্য, পরক্ষণে ইমরানের ২টি মোবাইল ফোন মহাস্থানের বেশ কয়েকজনের মাধ্যমে জমা দিয়েছি। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
এসআই আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি এর আগেও মহাস্থান বারিদার পাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বারিদারের পুত্র সিয়াম বারিদার বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় ঘুরতে ছিল। এসআই আব্দুর রাজ্জাক তাদের ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে সিয়ামের পরিবারের লোকজনসহ ৩ পরিবারের লোকজন এসআই রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থের দাবি করেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তাদের মিথ্যা মাদক মামলায় জেলে পাঠিয়ে দেন এসআই রাজ্জাক। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার সিয়ামের পিতা শহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, আমার ছেলে সিয়াম কোনদিন বিড়ি সিগারেট খায়নি। এলাকায় খোঁজ নিলে সবাই বলবে আমার ছেলে কেমন। অথচ এসআই আব্দুর রাজ্জাক তাকে আটক করে মিথ্যা মাদক মামলা দিয়েছে। পরবর্তীতে আমার ছেলে জেল থেকে ফিরে অস্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করছে। এটার জন্য এসআই রাজ্জাক দায়ী। তিনি বলেন আল্লাহ একদিন তার সঠিক বিচার করবেন। মহাস্থান প্রতাববাজু গ্রামের ইমদাদুল হকের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়, এসআই রাজ্জাক। পরে ছেড়ে দেওয়ার নামে ৫ হাজার টাকা নেন। ছেড়ে তো দেয়ইনি বরং টাকা নিয়ে চালান দিয়েছে। মহাস্থানের সচেতন এলাকাবাসীরা বলেন, কেউ মাদক বিক্রি করুক বা আইনী অপরাধ করুক। তার জন্য দেশের প্রচলিত আইন আছে। আইন সঠিক ভাবে প্রয়োগ না করে টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া এ কেমন প্রশাসনিক ক্ষমতা? বর্তমান দেশের পুলিশ তো এখন অনেক ভালো। কিন্তু ২-১ জন অসৎ পুলিশের জন্য পুরো বাহিনীর দুর্নাম হওয়ার আগেই প্রশাসনের উচ্চ মহলে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মহাস্থানের একাধিক ব্যক্তিরা জানান, এসআই রাজ্জাক মহাস্থান এলাকায় টাউট-বাটপার ও দালালদের নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন। তাদের মাধ্যমেই তিনি এহেন অপকর্মকাণ্ড সিংহের মত চালিয়ে যাচ্ছেন। এক কথায় মহাস্থানে সাধারণ নিরীহ মানুষের এক আতঙ্কের নাম এসআই রাজ্জাক।
বগুড়া শিবগঞ্জ থানার এসআই রাজ্জাকের লাগাম টেনে ধরার কেউ কি আছেন !

Viewed 240 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!