December 17, 2025

Daily Amar Vasha

উত্তর জনপদে সত্য প্রকাশে দৃঢ়

সমাজে নারীমুক্তির সংগ্রামে, চিন্তা,দর্শনে বেগম রোকেয়া

ডেস্ক রিপোর্টঃ

অবিভক্ত বাংলার পূর্বাংশে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চলে যে অসামান্য ও মহীয়সী নারী-জাগরণের পথিকৃতের উদ্ভব হয়েছিল, তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। একেবারে পশ্চাদপদ ও রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের গভীর থেকে তিনি কীভাবে এত উচ্চমার্গীয়, বিশ্বমানের নারীবাদী চেতনা লাভ করলেন—এ প্রশ্ন আজও বিস্ময়কর। মূলত তার শৈশব-কৈশোরের চারদেয়াল-আবদ্ধ, অধিকারবিহীন নারী জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং নারীর স্বাধীন মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সম্পর্কে গভীর সচেতনতাই তাকে নারী-জাগরণের অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিল। গভীর অন্তর দৃষ্টির অধিকারী ছিলেন বেগম রোকেয়া। সে যুগেই রোকেয়া স্পষ্ট বুঝেছিলেন যে, নারীর উন্নয়ন বা নারীমুক্তি কারও দয়া বা পুরুষের দানে আসবে না; নারীকেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সে অধিকার ছিনিয়ে নিতে হবে। তিনি পুরুষের সম-অধিকার ও সম-মর্যাদা নারীর জন্মগত অধিকার এই দাবি তুলে বাংলার মুসলিম সমাজে নারীমুক্তির সংগ্রামের প্রকৃত সূচনা করেন এবং নারীর স্বতন্ত্র মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার থাকেন।

১৮৮০ সালে ৯ই ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দের একটি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই ব্যক্তিত্ব মাত্র ৫২ বছর বয়সে ১৯৩২ সালের ৯ই ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।  তার পিতা জহির মোহাম্মদ আবু আলী সাবের সম্ভ্রান্ত ভূ-স্বামী ছিলেন। তার দুই পুত্র আবুল আসাদ ইব্রাহিম সাবের ও খলিল সাবের এবং তিন কন্যা করিমুন্নেসা, রোকেয়া ও হুমায়রা। রোকেয়ার দুই ভাই কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। তারা ছিলেন ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত এবং তাদের চিন্তা-চেতনায় আধুনিক সভ্যতার প্রচুর প্রভাব পড়ে। জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা ইব্রাহিম সাবেরের ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে করিমুন্নেসা ও রোকেয়া ইংরেজি শিক্ষায় যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। আনুমানিক ১৩ বৎসর বয়সে বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তিনি ছিলেন পেশায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। আসলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ্বে যখন রোকেয়ার জন্ম সেই সময়টা ছিল ভারতীয় মুসলিম সমাজের জন্য এক চরম সংকটময় ও অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়। ইংরেজ সরকার কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইন (১৭৯৩), লাখেরাজ সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ আইন (১৮২৮) এবং অন্যান্য পদক্ষেপ মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উপর ছিল মারাত্মক আঘাতস্বরূপ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থা। কারণ এটা ছিল লাখেরাজ সম্পত্তির উপর নির্ভরশীল।

প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মুসলমান সমাজ ধর্মের নামে নানাবিধ অধর্ম ও কুসংস্কারের বেড়াজালে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এর ফলশ্রুতিতে ইসলামের মূল আদর্শ তথা সাম্যবাদ ও ভ্রাতৃত্বের নীতি থেকে ভারতীয় মুসলিম, বিশেষত বাঙালি মুসলিম সমাজ তখন অনেক দূরে সরে যায়। সামন্তবাদ, রাজতন্ত্র, পীরতন্ত্র, গোত্রবাদ, কৌলিন্য প্রথা ইত্যাদি গোটা জাতির উপর দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। রক্ষণশীলতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা ও পশ্চাদমুখিতা সবদিক দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়কে গ্রাস করেছিল।

মুসলিম সমাজে প্রচলিত অবরোধ প্রথার কঠোরতার কথা সম্যকভাবে উপলব্ধির জন্য বেগম রোকেয়ার নিম্নোক্ত উদ্ধৃতিটি যথেষ্ট সহায়ক হবে— শিয়ালদহ স্টেশনে প্লাটফরমে ভরা সন্ধ্যার সময় এক ভদ্রলোক ট্রেনের অপেক্ষায় পায়চারি করিতেছিলেন। কিছু দূরে আর একজন ভদ্রলোক দাঁড়াইয়া ছিলেন। তাহার পার্শ্বে একগাদা বিছানা ইত্যাদি ছিল। পূর্বোক্ত ভদ্রলোক কিঞ্চিৎ ক্লান্তি বোধ করায় উক্ত গাদার উপর বসিতে গেলেন, তিনি বসিবা মাত্র বিছানা নড়িয়া উঠিল। তিনি তৎক্ষণাৎ সভয়ে লাফাইয়া উঠিলেন। এমন সময় সেই দণ্ডায়মান ভদ্রলোক দৌড়াইয়া আসিয়া সক্রোধে বলিলেন, ‘মশায় করেন কি? আপনি স্ত্রীলোকদের মাথার উপর বসিতে গেলেন কেন?’ বেচারা হতভম্ব হইয়া বলিলেন, মাপ করবেন মশায়! সন্ধ্যায় আঁধারে ভালমত দেখিতে পারি নাই, তাই বিছানার গাদা মনে করিয়া বসিতেছিলাম। বিছানা নড়িয়া উঠায় আমি ভয় পাইয়াছিলাম যে, একি ব্যাপার। এ ঘটনার দ্বারা বোঝা যায় পর্দার দোহাই দিয়ে কিভাবে মেয়েদেরকে সবদিক দিয়ে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল।

জাতির এরূপ ক্রান্তিলগ্নে অন্ধকারে আলোর দিশারি হিসেবে আবির্ভূত হলেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া। একাধারে সাহিত্যিক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক, নারী জাগরণের অগ্রদূত ইত্যাদি বহুবিধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন তিনি। তার ছিল গভীর অন্তর্দৃষ্টি; চিন্তাশক্তি ছিল পরিপক্ক ও দূরদর্শিতাপূর্ণ; লেখনী ছিল যুক্তিপূর্ণ ও সাহিত্যরসে ভরপুর।

বস্তুত শিক্ষা মানুষের উন্নতির অন্যতম সোপান। শিক্ষা মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি ও সম্ভাবনাকে জাগ্রত করে। এর মাধ্যমেই মানুষের সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তি বিকশিত হয় এবং বুদ্ধিবৃত্তি শাণিত হয়। অথচ বাংলার মুসলিম নারীদেরকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল যা রোকেয়াকে করেছিল দারুণভাবে ব্যথিত ও বিচলিত। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন এক মাত্র শিক্ষার আলোই পারে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজমান কু-প্রথা, কুসংস্কারের পুঞ্জিভূত আবর্জনা সমূলে উৎপাটন করতে। অত্যন্ত বিচক্ষণ, আত্মপ্রত্যয়শীল ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রোকেয়া মনে প্রাণে অনুধাবন করেছিলেন যে, শিক্ষার আলোর প্রভাবে নারীমনে সচেতনতা ও আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত হয়ে উঠতে পারে এবং সমাজে নারী তার নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবে।

নারী শিক্ষা বিস্তারের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল। এটিই কলিকাতার বুকে স্থাপিত প্রথম মুসলিম বালিকা বিদ্যালয়। একজন মহিলার পক্ষে কলকাতার মত এত বড় শহরে স্বামী প্রদত্ত দশ হাজার টাকা দিয়ে বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা কত বড় সাহসের কাজ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রবল সামাজিক বিরোধিতা, সরকারি অনুদানের অভাব ইত্যাদি বহুবিধ প্রতিকূলতার মুখেও এই মহিয়সী ক্ষণজন্মা দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে গেছেন শুধুমাত্র স্কুলের উন্নতির জন্য।

নারীশিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে রোকেয়া নারী-পুরুষ সম্পর্কের পুনর্গঠন করতে চেয়েছেন। তাকে বুঝতে হলে তার সময়ের প্রেক্ষাপটে তাকে মূল্যায়ন করা দরকার। যেহেতু অবরোধ প্রথার কারণে সে সময়ে মেয়েরা চার দেয়ালের নাগপাশ হতে মুক্ত হয়ে কোনো প্রকার সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারত না, তাই এতে সামাজিক উন্নতির দ্বারও রুদ্ধ হচ্ছিল। এ পরিস্থিতিতে রোকেয়া পর্দা রক্ষা করে মেয়েদেরকে শিক্ষার্জনে আগ্রহী করে গড়ে তোলার জন্যই তার কর্মপরিধি ব্যাপ্ত করেছিলেন। অর্থাৎ তিনি পুরুষদেরকে অবজ্ঞা করে মেয়েদের অধিকারকেই শুধু বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে ব্যাপারটা তা নয়। কাজী নজরুল ইসলামের অভূতপূর্ব কাব্যিক ছন্দের প্রতিধ্বনিতে বিদুষী নারী বেগম রোকেয়ার জীবন আদর্শে বাস্তব রূপ দেখত—

‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’

‘কোনকালে একা হয়নিকো জয়ী, পুরুষের তরবারী;

প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়াছে,বিজয়ালক্ষী নারী।’

কাজী নজরুল ইসলামের এই কালজয়ী বাণী সমাজে খুব সহজেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। অথচ নারী পুরুষের সমতার দাবি জানিয়ে আজ থেকে বহু আগেই কলম তুলে ধরেছিলেন এক অসামান্য নারী বেগম রোকেয়া।

নারীর স্বাধীনতা সম্পর্কে আপন ধারণা ব্যক্ত করতে গিয়ে বেগম রোকেয়া লিখেছেন, স্বাধীনতা অর্থে পুরুষের ন্যায় উন্নত অবস্থা বুঝিতে হইবে, পুরুষের সমকক্ষতা লাভের জন্য আমাদিগকে যাহা করিতে হয়, তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনতাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয়, তবে তাহাই করিব। আবশ্যক হইলে আমরা লেডি কেরানি হইতে আরম্ভ করিয়ো লেডি ম্যাজিস্ট্রেট, লেডি ব্যারিষ্টার, লেডি জর্জ সবই হইব।

তিনি আরও বলেন, আয় করিব না কেন? আমাদের কি হস্ত নেই, কদম নেই, না বুদ্ধি নেই? যে পরিশ্রম আমরা স্বামীর গৃহস্থালীকার্যে ব্যবহার করি, সেই পরিশ্রম দ্বারা কি স্বাধীন ব্যবস্থা করতে পারিব না? আমরা যদি পাতশাহী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করিতে না পারি, তবে কৃষিক্ষেত্রে প্রবেশ করিব। ভারতে পতি দূর্লত হয়েছে বলিয়ে কন্যাদের কেঁদে মৃত্যু কেন? কন্যাগুলোকে সুশিক্ষিত করিয়া কর্মক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও নিজের অন্ন, বস্ত্র নিজে আয় করুক।

বেগম রোকেয়া সমাজে নারীর অবনত অবস্থার জন্য সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নারী-পুরুষের মধ্যকার বিরাজমান সামাজিক বৈষম্যসহ নারীর সমান সুযোগের অভাবকে দায়ী করেছেন তেমনি নারীর অসচেতনতা, নিষ্ক্রিয়তা, দায়িত্বহীনতা ও মানসিক দৃঢ়তার অভাবকেও দায়ী করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ‘স্ত্রী জাতির অবনতি’তে আরও বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা তাকেই সহয়তা করেন, যে নিজেকে নিজে সহয়তা করে। তাই বলে আমাদের অবস্থা আমরা গণ্য না করিলে আর কেহ আমাদের জন্য ভাবিবে না। ভাবলেও তাহা হইতে আমাদের ষোল আনা লাভ হবে না।’ রোকেয়া তার অর্দ্ধাঙ্গী প্রবন্ধে স্বামী-স্ত্রীর তুলনা দেন এভাবে, ‘স্বামী যখন পৃথিবী হইতে সূর্য্য ও নক্ষত্রের দূরত্ব মাপেন স্ত্রী তখন একটা বালিশের কভারের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ (সেলাই করিবার জন্য) মাপেন। স্বামী যখন কল্পনার সাহায্যে সুদূর আকাশে গ্রহ-নক্ষত্রমালা বেষ্টিত সৌরজগতে বিচরণ করেন, সূর্যমন্ডলের ঘনফল তুলনাদন্ডে ওজন করেন এবং ধুমকেতুর গতি নির্ণয় করেন স্ত্রী তখন রন্ধনশালায় বিচরণ করেন, চাউল, জল ওজন করেন এবং রাধুনীর গতি নির্ণয় করেন।’ তিনি এভাবে বিভিন্ন তুলনা টেনে দেখান যে, নারী-পুরুষের কর্ম প্রকৃতির ধরনই পৃথক যা তাদের সমাজে ভিন্ন অবস্থান দিয়েছে। এখানে তিনি নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মনে করেন নারীকে যদি যথাযথ শিক্ষার মাধামে বাইরের জগতে চলতে দেয়া হয়, তাহলে তারাও সমাজে পুরুষের ন্যায় সমকক্ষতা লাভ করতে পারবে।

তিনি শিক্ষাকে নারীর শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি মনে করেন, এ শক্তি লাভ করলে নারীর উন্নয়ন ঘটবে। পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে তার ক্ষমতায়ন হবে। এটা ছিল তার নারীকে অর্থনৈতিকভাবে সয়ংসম্পূর্ণ করার যুগান্তকারী আহবান।

১৯১৬ সালে তিনি গঠন করেন ‘আনজুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম’ (বাংলা মুসলিম মহিলা সমিতি)। এর মাধ্যমে নারী শিক্ষা, বিধবা পুনর্বিবাহ, বহুবিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। বর্তমান বাংলাদেশের নারী শিক্ষায় ও নারী সমাজ সম্পর্কে রোকেয়া যা চেয়েছিলেন, তার অনেকটাই আজ আমরা অর্জন করেছি। বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান ২০২৪ অনুযায়ী, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে মেয়েদের ভর্তির হার ছেলেদের চেয়ে বেশি। আজ নারীরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও পুরুষের মতো অবদান রাখছে। নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারও কাজ করে চলেছে। নারী ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে আছে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি, মহিলা আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম,ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট, বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ, নির্যাতিত নারী ও শিশুর আইনী সহায়তা, টোলফ্রি ন্যাশনাল হটলাইন ১০৯, ওয়ানস্টপ ক্রাইসেস সেন্টার (সেল) স্থাপন, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মহিলা সহায়তা কর্মসূচি এছাড়াও নারী ও শিশুর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক সেবা দিয়ে চলেছে।

বেগম রোকেয়া একশ বছর আগে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন—মেয়েদের পড়াশোনা, স্বাবলম্বী হওয়া, সমাজে মাথা তুলে দাঁড়ানো—তার বড় অংশ আজ ২৪ জুলাই যুদ্ধে ছেলেদের অগ্রভাগে মেয়েরা অংশ নিয়েছিল। ৭১ এর পুনর্জন্ম  ঘটলো ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ।

প্রাথমিকের ক্লাসরুমে যখন দেখি ছোট্ট মেয়েটি বই নিয়ে বসে আছে, তখন মনে হয় রোকেয়া। বর্তমানে বাংলার নারীরা নিজেদেরকে সুশিক্ষিত করে সমাজের সর্বস্তরে প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে বেগম রোকেয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে চলেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘শিক্ষা হলো নারীর মুক্তির চাবিকাঠি’। আজ আমাদের কাজ সেই চাবি দিয়ে পুরো দরজা খুলে দেওয়া—যাতে কোনো মেয়েই পড়াশোনা শেষ করার আগে ঝরে না যায়, যাতে বিজ্ঞান-গবেষণা-নেতৃত্বে নারী-পুরুষ সমান তালে এগোয়। তবেই বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূর্ণতা পাবে। ‘নারী জাগিলে জাগিবে জাতি, নারী শিক্ষিত হইলে শিক্ষিত হইবে সমাজ’—এই কথাটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক।

Viewed 500 times

Spread the news
Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.
error: Content is protected !!